
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে অসুস্থ গরুর মাংস সহ ৫ জনকে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। ঘটনাটি ঘটেছে, সোমবার রাতে তবকপুর ইউনিয়নের বাড়াইপাড়া গ্রামে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন উলিপুর থানার ওসি জিল্লুর রহমান।
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কিশামত বাড়াইপাড়া গ্রামের সৌরভ কুমার পালের একটি গাভীর বাছুর হয়। এরপর গাভীটি অসুস্থ পড়লে স্থানীয় ভেটেরিনারি দুই পল্লী চিকিৎসককে ডাকা হয়। তাদের পরামর্শে অসুস্থ গরুটিকে কুড়িগ্রামের এক কসাইয়ের কাছে বিক্রি করা হয়। স্থানীয় জনতা বিষয়টি জানতে পেরে ওই গরুর মাংস সহ তাদেরকে আটক করেন। পরে ভ্রাম্যমান আদালতে তাদের জেল-জরিমানা করা হয়।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- উলিপুর পৌরসভার পশ্চিম নাওডাঙ্গা গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে পল্লী পশু চিকিৎসক আজিমনুর রহমান (৪২), পশ্চিম শিববাড়ি গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে পল্লী পশু চিকিৎসক জসিম উদ্দিন (২৮), কুড়িগ্রাম পৌরসভার একতাপাড়া গ্রামের আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে কসাই শাহ আলম ওরফে নাদু (৩৮) ও কিশামত তবকপুর বাড়াইপাড়া গ্রামের শ্যামল চন্দ্র পালের ছেলে গরুর মালিক সৌরভ কুমার পাল (৩২)।
মঙ্গলবার(২০ মে) সকালে সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। এসময় বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন, ২০১১এর ১৭ ধারা লংঘন (নিবন্ধন ও সনদ ছাড়া ভেটেরিনারি প্র্যাকটিস) করায় আইনের ৩৫ ধারা অনুযায়ী পশু চিকিৎসক আজিমনুর রহমানকে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড। অপর পল্লী পশু চিকিৎসক জসিম উদ্দিনকে ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। পশু জবাই ও মানুষের মান নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১১ এর ধারা ৩(১) ও ৪(১) এর লংঘন (জবাই নিষিদ্ধ পশু জবাই ও জবাইখানার বাইরে জবাই) করায় উক্ত আইনের ২৪(১) ধারা অনুযায়ী কসাই শাহ আলম ওরফে নাদুকে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ১০০ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক দিনের কারাদণ্ড ও গরুর মালিক সৌরভ কুমার পালকে ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ডসহ পরবর্তীতে তাকে উষ্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান ও শান্তিভঙ্গ না করার শর্তে মুচলেকা প্রদানের আদেশ দেওয়া হয়। এছাড়াও নুর ইসলাম (৩৪) নামের মাংসবাহী মোটরসাইকেল চালককে মুচলেকা প্রদানের শর্তে অব্যহতি দেওয়া হয়।
এবিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, গরুটির দুই মণ মাংস এবং চামড়া জব্দ করা হয়। আসামীগণ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। এবং সাক্ষীগণ সাক্ষ্য প্রদান করেন। ঘটনা উদঘাটিত হওয়ায় দুইটি আইন অনুযায়ী মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়।