1. admin@sokalerbangla.com : সকালের বাংলা :
  2. info.jahid307ulipur@gmail.com : jahid Hossain : jahid Hossain
  3. naiknajmul@gmail.com : Najmul Hossain : Najmul Hossain
বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ০৯:৫০ অপরাহ্ন
শিরবাম:
আশুলিয়া রাজস্ব সার্কেলের সার্বিয়ার আবু বক্কর ছিদ্দিকের দুর্নীতি-অনেকেই হয়রানি! সদর উপজেলার দত্তপাড়া টু চাটখিল খালের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রশাসনিক উদ্যোগ নির্ধারিত পশুর হাটের উদ্দেশে যাওয়া গাড়ি মাঝপথে থামানো যাবে না বাগেরহাট ইনিষ্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজিতে তালা ঝুলিয়ে শাটডাউন ঘোষনা শিক্ষার্থীদের সুন্দরবনের মধুর মান ক্ষুন্ন করছে ভেজাল মধুতে নারী সেবাপ্রার্থীদের জন্য একটি মাতৃদুগ্ধ কর্ণার স্থাপন দত্তপাড়া ইউনিয়নে দুর্যোগ সহনশীল অবকাঠামো উন্নয়ন যশোরের সীমান্তে বিজিবি কঠোর অভিযানে দুই কোটি টাকার অবৈধ চোরাচালানী পণ্য আটক শার্শায় তক্ষকসহ দুইজন আটক করেছে পুলিশ  উল্লাপাড়ায় সলপ ইউনিয়নে কৃষকের ফসলের মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত। 

সুন্দরবনের মধুর মান ক্ষুন্ন করছে ভেজাল মধুতে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২২ মে, ২০২৫

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সুন্দরবনের মধুর ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত সুন্দরবন উপকূলের মৌয়াল বনজীবীসহ সুধী মহল। আবহমান কাল থেকে সুন্দরবনের মধুর একটি সুনাম রয়েছে। দেশ-বিদেশের ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের মধুর উপকারিতা ও গুণগতমানের সুনাম অক্ষুন্ন রেখে চলেছে। প্রতিবছরের ন্যায় এ বছর ও পহেলা এপ্রিল বন বিভাগ থেকে পাশ গ্রহণ করে মৌয়ালরা মধু সংগ্রহ করতে যায় সুন্দরবনে। জানা গেছে, প্রকৃত মৌয়ালরা মধু সংগ্রহের আগেই, অসাধু মধু ব্যবসায়ীদের প্ররোচনায় পড়ে মাছ কাঁকড়া সংগ্রহ করা জেলে বাওয়ালিরা সাবাড় করে দিয়েছে সুন্দরবনের অপরিপক্ক মধু।
অতি সম্প্রতি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার প্রকাশিত খবরের তথ্যে বলা হয়েছে, সুন্দরবনের মধুর চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে সাতক্ষীরার শ্যামনগরের অসাধু ব্যবসায়ীরা খাঁটি মধুর নামে চালাচ্ছেন ভেজাল মধুর ব্যবসা। সুন্দরবন সংলগ্ন বিভিন্ন লোকালয়ে বক্স বসিয়ে প্রাকৃতিক খাঁটি মধুর নামে চিনিযুক্ত কৃত্রিম উপায়ে তৈরি করছে ভেজাল মধু (নকল মধু)।
৮ এপ্রিল বিকালে শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের সরদার বাড়ি এলাকায় মোস্তফা মল্লিকের মৌ-খামারে মধুর বাক্সে চিনি দিয়ে মধু তৈরি করা হচ্ছে এমন সংবাদে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন।এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ভেজাল মধু তৈরির মালিক মোস্তফা মল্লিক হাতেনাতে আটক করে। পরে তাকে ৫০হাজার টাকা জরিমানা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল রিফাত।
এছাড়া পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের স্টেশন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, প্রতিবছর পহেলা পহেলা এপ্রিল থেকে ৩১জুন পর্যন্ত ধাপে ধাপে অর্থাৎ ১৪দিন পর পর মৌয়ালদের পাশ দেওয়া হয়। সুন্দরবন পশ্চিমবন বিভাগ সাতক্ষীরা রেঞ্জে ডিভিশন থেকে মধু এবং মোমের নির্ধারিত টার্গেট দেওয়া থাকে। তিনি আরো বলেন, ২০২৪-২৫ বছর অর্থবছরে ১৫শত কুইন্টাল মধু ও ৪শত কুইন্টাল মোমের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে পশ্চিম বনবিভাগ সাতক্ষীরা রেঞ্জে আনুষ্ঠানিকভাবে মধু আহরণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনে সুন্দরবনের মধ্যে বনদস্যুদের আনাগোনা দেখা দিয়েছে, ফলে মৌয়ালদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
সুন্দরবনের খাঁটি মধু সংরক্ষণের জন্য সরকারিভাবে ন্যায্য মূল্যে মৌয়ালদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে পরিশোধনের মাধ্যামে দেশে ও বিশ্ব বাজারে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা সম্ভব হতে পারে। তবে জানা যাচ্ছেএক শ্রেণীর মহাজন ও দাদন ব্যবসায়ীদের কারণে মৌয়াল জিম্মি হয়ে পড়েছে।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ জেড এম হাছানুর রহমান বলেন, ২০২৪ সালে সাতক্ষীরা রেঞ্জে ৩৬৪ পাশে ২হাজার ৪৭১মাধ্যমে ১হাজার ২৩৫দশমিক ৫০কুইন্টাল মধু আহরণ করা হয় ও ৩৭০দশমিক ৬৫কুইন্টাল মোম সংগ্রহ হয়। এতে সরকারি রাজস্ব আদায় হয় ২৭ লাখ ৯২ হাজার ২৩০টাকা। ২০২৫সালে ১৫শত কুইন্টাল মধু ৪শত কুইন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ অংশে ৫২ভাগ বনভূমিতে মধু সংগ্রহের অনুমতি দেওয়া হয়, বাকি অংশ অভয়ারণ্য হিসেবে সেখানে মধু মাছ কাঁকড়া সংগ্রহ করতে দেয়া হয় না।
মৌয়ালদের সুরক্ষার প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা বন বিভাগ থেকে প্রতিটা মুহূর্ত সুন্দরবনের মধু সংগ্রহকারী মৌয়ালদের পাশে গিয়ে তাদের সহযোগিতা করে থাকি। সুন্দরবনের খাঁটি মধু সংগ্রহ করার জন্য আমরা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মৌয়ালদেরকে সচেতন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
গবেষক ব্যারিস্টার মাহমুদুল হাসান বলেন, সুন্দরবনের মধুর চাহিদা বেড়েছে, সে কারণে আনুপাতিক হারে মধু চাষী এবং মৌয়ারদের সংখ্যাও বেড়েছে। সুন্দরবনের মধু সংগ্রহকারী মৌয়ালরা বিশুদ্ধ উপায়ে সুন্দরবনের মধু সংগ্রহ করছে কি না এবং মধুতে ময়লা এবং পানিসহ কোন প্রকার অপদ্রব্য না মিশাতে পারে সে বিষয়গুলো মনিটরিং এর ব্যবস্থা রাখা। মধু বাণিজ্যিক উপায়ে যারা ব্যবসার সাথে যুক্ত তাদের মধু সংশ্লিষ্ট দপ্তরের যত উপযোগী মনিটরিং ব্যবস্থা রাখতে হবে।
অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম ‌বলেন, একমাত্র পৃথিবীর একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন যার বড় অংশ বাংলাদেশে। আর বাংলাদেশের সুন্দরবনের মধু আন্তর্জাতিক বাজারেও সুনাম রয়েছে। সুন্দরবনের মধু সংগ্রহ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে কয়েক শতাধিক মৌয়াল পরিবার। উপকূলীয় অঞ্চলে বড় সংখ্যক মৌয়ালদের কর্মসংস্থানের স্থান সুন্দরবন। এখানে অসাধু উপায়ে সুন্দরবনের মধু সংগ্রহসহ বাজারজাতকরণ ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে ধ্বংসের মুখে ফেলে দিলে, বড় সংখ্যক মৌয়ালদের কর্মসংস্থান হ্রাস পাবে। সুন্দরবনের খাঁটি মধু সংরক্ষণের জন্য মধু সংগ্রহ থেকে শুরু করে বাজারজাতকরণ সকল প্রক্রিয়ার যথাযুক্ত মনিটরিং ব্যবস্থ রাখতে দাবী রাখেন।
লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মন্ডল বলেন, বাংলাদেশের সুন্দরবনের মধু দেশ এবং দেশের বাইরে অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। যার স্বাদ এবং ঘ্রাণের কারণে এই মধুর অন্যান্য মধুর স্বাদ থেকে আলাদা হয়। কিন্তু একশ্রেণীর অসৎ মধু ব্যবসায়ী বাক্স দিয়ে মধু সংগ্রহ করা, চিনি জ্বালিয়ে মধু তৈরি করা, তাদের কারণে সুন্দরবনের মধুর সুনাম নষ্ট হচ্ছে। প্রকৃতিগত কারণে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে খলিসা ফুলের মধু সংগ্রহের খবর পাওয়া যায়। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শুরু করে যে সকল বনজীবিরা মাছ, কাঁকড়া সংগ্রহের জন্য সুন্দরবনে যান। তাদের সামনে মধুর চাক পড়লে তারা কেটে নিয়ে আসে। ফলে পহেলা এপ্রিল সিজেন শুরু হওয়ার আগেই অনেক মধুর চাক তা পরিপক্ক না হওযার আগে হতে তারা মধু সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করছে।
ফলে সুন্দরবনের মধু সুনামসহ ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। সুন্দরবনের মধুর গুণগত মান নির্বাচনে গ্রেট সিস্টেম করা উচিত বলে মনে করেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার মধু বৈশিষ্ট্য নিয়ে বলেন এই মধু প্রসেসিং করে বিশ্ববাজারে সুনাম অর্জন করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের মধু দেশ ও দেশের বাইরে চাহিদা থাকলেও প্রসেসিংসহ খাঁটি সুন্দর বনের মধুরব্র্যান্ডিং না হওয়ার কারনে চাহিদা পূরণ হচ্ছে না।
তিনি পরামর্শে বলেন, প্রকৃত সুন্দরবনের মধু সংগ্রহকারী মৌয়ালদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তোলা। প্রকৃত মধুর সিজনকে এগিয়ে এনে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে মধু সংগ্রহের অনুমতি দেওয়া। সবচেয়ে সুন্দরবনের গুণগত ঔষধি মানসম্পন্ন খলিশা ফুলের মধুর সময়টি বিবেচনা করা।
মুন্সিগঞ্জ বাজারের পাশে মৌয়াল ও নীলডুমুর বাজারের পাশে সুন্দরবন নির্ভরশীল বনজীবি মৌয়ালদের সাথে কথা হলে আব্দুল হালিম, শহিদুল ইসলাম, কুদ্দুস গাজী, সিরাজুল ইসলাম, খোকন কেলাবক্স, নেপাল মন্ডল, রবীন্দ্র মন্ডল গত ১০বছরে সুন্দরবনের মধু নিয়ে আলাপচারিতায় জানা গেল সুন্দরবনের মধু সংগ্রহের অনেক নিয়ম নীতি আছে, বর্তমান সময়ে তা পালন করা হয় না।
বর্তমানে বাংলাদেশ অংশ পশ্চিম বনবিভাগ সাতক্ষীরা রেঞ্জ এরিয়ায় অভয়ারণ্য বাদ দিয়ে যে অংশটুকু মধু সংগ্রহ করার অনুমতি দিয়েছে। সেখানে অন্যান্য পেশাজীবি মাছ কাঁকড়া সংগ্রহকারীরা সিজেন শুরু হওয়ার আগেই তারা মধু কেটে নিয়ে আসে। এছাড়া প্রতিটি নৌকায় ৫ থেকে ৬জন করে মৌয়াল থাকে, যারা একটি মহাজনি চক্র দাদন নিয়ে সুন্দরবনের মধু সংগ্রহ করতে জান। যার একটি বড় অংশ দাদন ব্যবসায়ীকে কম মূল্যে মধু দিয়ে লাভ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হয়। তাতে করে আমরা মৌয়ালেরা যে মধু সংগ্রহ করতে হয় তাতে খুব বেশি লাভ থাকে না।
তারপরেও জীবনের ঝুঁকি বাদা বনে জাতি হয়। আব্দুল হালিম বলেন, গত বছর আমাদের নৌকা থেকে একজনের কুমিরে আক্রমণ করেছে, তাকে নিয়ে আর মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। বন আইনের জটিলতায় কারনে ক্ষতিপূরণের সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এ বছর সুন্দরবনের মধ্যে জলদস্যুদের আক্রমণ বেড়েছে সে কারণে মৌয়লেরা মধু সংগ্রহ করতে যেতে চাইছে না। এছাড়া মৌসুম শুরুর আগেই তারা অনৈতিক উপায়ে সুন্দরবন থেকে মধু সংগ্রহে উঠেপড়ে লেগেছে। প্রায় দুই দশক ধরে সুন্দরবন থেকে মধু সংগ্রহে জড়িত বুড়িগোয়ালীনি গ্রামের আজিজুল গাজী জানান, মুলত এপ্রিলের শুরুতে মৌচাক গুলো মধুতে পরিপূর্ণ হয়। কিন্তু তার আগেই মধু সংগ্রহের কারণে মৌচাক ক্ষতিগ্রস্ত করার দরুণ নির্দিষ্ট মৌসুমে যেয়ে মৌয়ালরা পর্যাপ্ত মধু পায় না।
ইতোমধ্যে সুন্দরবন তীরবর্তী বিভিন্ন অংশে চিনি জ্বালিয়ে তৈরী মধু এনে জড়ো করা হয়েছে বলেও দাবি তাদের। এসকর অপরাধ প্রবনতা বন্ধে তিনি মৌসুম শুরুর আগেই সুন্দরবন তীরবর্তী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভেজাল মধু তৈরীর জন্য প্রস্তুতকৃত চালান আটকের দাবি জানান। এছাড়া বাক্স দিয়ে মধু সংগ্রহ করার মৌচাষীরা সুন্দরবনের মুধ সুনাম নষ্ট করছে বলে জানান।
কৃত্রিম উপায়ে মধু সংগ্রহ করলে সুন্দরবনের মধুর সুনাম অক্ষুন্ন থাকবে?প্রশ্নবিদ্ধ ভাষায় বলা কথাগুলি উপকূলে সুন্দরবন নির্ভরশীল বনজীবি মৌয়ালদের সংকটময় হয়ে উঠেছে। তাই কৃত্রিম উপায়ে মধু সংগ্রহ করা বাস্ক মৌ চাষীদের সাথে কথোপকথনে জানা গেল- সাতক্ষীরা রেঞ্জ পশ্চিম সুন্দরবন এরিয়ায় গত ২ দশক ধরে ৫ শতাধিক মৌ চাষী খামারীরা বাক্স পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ করছে। সুন্দরবন লাগোয়া শ্যামনগর উপজেলায় ছয়টি ইউনিয়নের প্রায় ৩ শতাধিক কৃত্রিম উপায়ে মধু সংগ্রহ করা মৌয়াল বা মৌ চাষী রয়েছে। যারা সুন্দরবনে খলিশা ফুলের মধু সংগ্রহ করার সময়ে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ থেকে সুন্দরবনের কাছাকাছি স্থানে বাক্স পদ্ধতি দিয়ে মধু সংগ্রহ করে।
মৌ চাষী জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, শাহীনুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুন তারা বলেন, সফল উদ্যোক্তা হিসেবে মৌ-চাষ করে আমাদের এই অঞ্চল থেকে কয়েক শতাধিক পরিবার আত্মকর্মসংস্থান পথ খুঁজে পেয়েছে। আমরা বছরে বরুই থেকে শুরু করে সরিষা, লিচু, সবেদা, কালোজিরাসহ সুন্দরবনের খলিশা, গরান, গেওয়া, বাইন এর ঠিক মধুর সময়ের আগেই আমরা সেই সমস্ত এলাকার কাছাকাছি গিয়ে বাক্সগুলো স্থাপন করি। তারপর সেখান থেকেই আমরা মধু সংগ্রহ করি। আমাদের প্রতিটি খামারের নামকরণ করে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিতে হয়।
আমাদের সংগঠন আছে, সমিতি আছে, দেশব্যাপী ও জেলাব্যাপী। আমাদের মধু প্রসেসিং সম্পূর্ণ প্রযুক্তিগত বৈজ্ঞানিক উপায় এবং তা প্রশিক্ষণ নিয়ে মধুর খামার গড়ে তুলেছি। তবে কিছু কিছু অসৎ মৌ-চাষী আছে তাদের কারণেই মধুর বাণিজ্যিক স্থানসহ মধুর সুনাম নষ্ট হচ্ছে। তাছাড়া আমাদের মধু মার্কেটিং এ ভালো সুনাম আছে। আমাদের খামার থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তারা মধু নিয়ে যায় আমাদের মধু ন্যায্য মূল্যে বিক্রি হয়। আমরা বেসরকারিভাবে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতিতে যে মধু সংগ্রহ করে থাকি সেটি বৈধ। তবে বছরের প্রায় ছয় মাসের মত মৌমাছিগুলো বাঁচিয়ে রাখতে গিয়ে চিনির পানি খাওয়াতে হয়। সে কারণে অনেকেই মনে করেন বাক্সের মধু মানে চিনির মধু। তবে সুন্দরবনের মধুর আলাদা বৈশিষ্ট্য গুণ রয়েছে। সেটি আমাদের বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়াতে শুরু করে মার্কেটিং পর্যন্ত সারা বছরই সুন্দরবনের মধুর চাহিদা থাকে কিন্তু অন্যান্য মধুর সেই তুলনা চাহিদা কম থাকে।
প্রফেসর শংকর মল্লিক বিভাগীয় প্রধান, বাংলা বিভাগ খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ, খুলনা তিনি বলেন, সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে মৌমাছি ও সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবেশের ক্ষতি না করে প্রকৃত মৌয়ালদের মধু সংগ্রহ, সংরক্ষণ প্রভৃতি বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয়।
সুন্দরবনের মধুর গুণগতমান সম্পন্ন ও সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে দাবি সমুহ ১. সুন্দরবনের সময় উপযোগী মধুর ক্যাটাগিরি সহ গ্রেড করতে হবে।২. সুন্দরবনের মৌয়ালদের প্রশিক্ষণসহ সুরক্ষা দিতে হবে।৩. কৃত্রিম উপায়ে (বাক্স) মধু ও সুন্দরবনের মধু লেভেলিং করতে হবে।৪. সুন্দরবনের মধু সংগ্রহ করতে যাওয়া মৌয়ালদের দাদন চক্র থেকে রক্ষা করে সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা চালু করতে হবে।৫. মৌয়ালদের সুরক্ষায় বন আইনের ক্ষতিপূরণের দাবিটি আরো সহজ প্রাপ্য করে তুলতে হবে।৬. সরকারিভাবে সুন্দরবনের মধু সংরক্ষণাগারসহ প্রসেসিং এর মাধ্যমে ব্র্যান্ডিং করে বাজারজাত করতে হবে।৭. সুন্দরবনের খলিশা ফুলের মধু সংগ্রহের সময় কাল এগিয়ে আনতে হবে।৮. মধু সংগ্রহের স্থান ও পরিধি বাড়াতে হবে।৯. সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় বাক্সে মধু চাষ বন্ধ করতে হবে।১০. সুন্দরবনের মধু সংগ্রহ থেকে শুরু করে বাজারজাতকরণ পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রে মনিটরিং ব্যবস্থা থাকতে হবে।পৃথিবীর একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন আর এই সুন্দরবনের মধু আন্তর্জাতিক বাজারে সুনাম অর্জন করেছে। সুন্দরবনের মধুর সুনাম ধরে রাখতে, মধু সংগ্রহ থেকে শুরু করে বিপণন পর্যন্ত সকল সেক্টরে সজাগ দৃষ্টির রাখার আহ্বান।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved , sokalerbangla.com
Theme Customized BY LatestNews