মোঃ জাকির হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় দুটি মন্দিরে সংঘটিত চুরির রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ছয়জন পেশাদার চোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে মন্দির থেকে চুরি হওয়া বিভিন্ন পূজার সামগ্রী ও চুরির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম।
জানা যায়, গত ১২ জুন রাত থেকে ১৩ জুন ভোরের মধ্যে বড়লেখার পাখিয়ালা এলাকার শ্রী শ্রী উদ্ভব ঠাকুরের আখড়া মন্দিরে এবং ২৬ জুন রাতে দক্ষিণভাগ সার্বজনীন দেবস্থলী মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটে। দুটি ঘটনাতেই বড়লেখা থানায় পৃথক মামলা দায়ের করা হয়।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) এর দিকনির্দেশনায় বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাহবুবুর রহমান মোল্লার তত্ত্বাবধানে এবং পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
অভিযানে প্রথমে দক্ষিণভাগ বাজারের রেললাইন এলাকা থেকে রুহেল আহমদ (৩০) কে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আরও পাঁচজন—আবু তায়েব আহমদ সাজু (২৮), নুর হোসন (৪০), জাকির হোসেন (৩১), মোঃ আলাল মিয়া (৩৮) ও শাহ আলী (৪২)-কে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়।
চোরদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বড়লেখার মাধবগুল এলাকায় শাহ আলীর ভাঙারির দোকান ও অন্যান্য আসামিদের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় চোরাই মালামাল। উদ্ধারকৃত সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে: ১১টি পিতলের ঘট, ২টি কাসার ঘণ্টা, ২টি পুস্প থালি, ১টি পিতলের প্রদীপ, ৮টি কাসার থালা, ৫টি কাসার বাটি, ২ সেট চিপ কোষা, ১টি পিতলের কলসি।
এছাড়া চুরির কাজে ব্যবহৃত কাটার, হেক্সো ব্লেড, হাতুড়ি, ছেলাই রেঞ্জ, রডের টুকরা ও একটি লাল জগ-ও উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত মালামাল মন্দির কর্তৃপক্ষ শনাক্ত করেছেন।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতরা চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তারা পেশাদার চোর এবং তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা জানান, চুরির ঘটনায় সাম্প্রদায়িক কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। এটি নিছক চুরির উদ্দেশ্যেই সংঘটিত হয়েছে।
শনিবার (২৯ জুন) বিকেলে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজমল হোসেন, বড়লেখা থানার ওসি মোঃ মাহবুবুর রহমান মোল্লা এবং পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ হাবিবুর রহমান।