1. admin@sokalerbangla.com : সকালের বাংলা :
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:১৮ অপরাহ্ন
শিরবাম:
আশুলিয়ায় তিতাস গ্যাসের ৫ শতাধিক বাসা বাড়ির অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন! সাভারে আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত ৪০ জনকে আটক করেছে পুলিশ! আশুলিয়ায় ৮ বছরের শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু-বাড়ির সেফটি ট্যাংকি থেকে লাশ উদ্ধার আশুলিয়ায় গাজীরচট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড এর শুভ উদ্বোধন টানা সপ্তম দিনের মতো কর্মবিরতিতে লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ এর কর্মীরা আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দাদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ আশুলিয়ায় অপরিকল্পিত বাড়ি নির্মাণ-বাড়ির মালিকের গাফেলতিতে ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু! সিরাজগঞ্জে রেল যোগাযোগ বৃদ্ধির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত এবং স্মারকলিপি প্রদান  প্রেমিকার হাতে প্রেমিকের বিশেষ অঙ্গ কর্তন উলিপুরে ইয়াবাসহ তিন মাদক কারবারি গ্রেপ্তার

আশুলিয়ায় দি-ল্যাবএইড হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নারীর মৃত্যুর পর আরো এক যুবকের মৃত্যু

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৩৭৫ Time View

বিশেষ প্রতিনিধিঃ ঢাকার আশুলিয়া জামগড়া দি ল্যাব এইড হাসপাতালের মহিলা ডাক্তার কর্তৃক জরায়ু টিউমারের অপারেশন করার সময় মূত্রখলি কেটে ভুল চিকিৎসায় এক মায়ের মৃত্যুর ঘটনার পর আরো এক যুবকের মৃত্যু হলো। প্রায় এক মাস এই নারী রোগী মৃত্যু শর্যায় ছিলেন। ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি-ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণেই তাদের রোগীর মৃত্যু হয়। এরকম ডাক্তাররের ভুল চিকিৎসায় একাধিক রোগীর মৃত্যুর পরও কিভাবে প্রতিষ্ঠানটি চলছে এমনই অভিমত প্রকাশ করেন সচেতন মহল।
সোমবার (১২ ফেব্রæয়ারি ২০২৪ইং) সকালে আশুলিয়ার জামগড়া ছয়তলা মোল্লা সুপার মার্কেটে দি ল্যাব এইড হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। ভিকটিম নিহতের পরিবার সূত্র জানায়, গত রবিবার ১১ ফেব্রæয়ারি দুপুরে এই প্রতিষ্ঠানে রোগীর পিত্তথলির অপারেশন বাবদ ৪০ হাজার টাকা চুক্তিতে ভর্তি করা হয়, এরপর রাতে পিত্তথলির অপারেশন করার পর একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়, এসময় রোগীর মুখ দিয়ে ফেনা উঠে তার মৃত্যু হয়। নিহহের নাম মোঃ মিজানুর রহমান বেপারী (৩০), সে মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার সূর্যমুখী গ্রামের মোঃ লুৎফর বেপারীর ছেলে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২ জুন ২০২২) ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, রহিমা বেগম (৪৮) কে গত (২৮ এপ্রিল ২০২২ইং) তারিখে জামগড়ার বেরুণ ছয়তলা মোল্লা সুপার মার্কেটে অবস্থিত দি- ল্যাব এইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এইদিনেই জরায়ু টিউমারের অপারেশন করেন হাসপাতালের এক মহিলা ডাক্তার, তাকে অপারেশন করার পর থেকেই অবস্থা অবনতির দিকে যেতে থাকে। হাসপাতালের মালিক মন্টুসহ ডাক্তারকে জানানো হলে তারা কোনো ব্যবস্থা নেইনি বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন। এমনকি তারা বলেওনি যে, রোগীর ভুল অপারেশন করা হয়েছে। চলমান দীর্ঘ ৩৫দিন চিকিৎসা করা অবস্থায় গত বুধবার দিবাগত রাত ৯টা ১৫ মিনিটে রহিমা বেগম এর মৃত্যু হয়।
নিহতের স্বামী মোঃ রেজাউল (৫৮) অভিযোগ করে বলেন, আশুলিয়ার জামগড়ার ছয়তলা এলাকার দি-ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তির পর অপারেশন করাই এরপর থেকে আমার স্ত্রীর অবস্থা বেশি খারাপের দিকে গেলে আমি দিশেহারা হয়ে তাকে নিয়ে ঢাকা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে ফেরত দেয়া হলে, পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে ভর্তি করি। সেখানে দীর্ঘ ১৮দিন ভর্তি রাখা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক এর মাধ্যমে জানতে পারছি আমার স্ত্রীর জরায়ু টিউমারের অপারেশনে ডাক্তার ভুল করে প্রসাবের নাল কেটে অন্য জায়গায় জয়েন্ট করে দিয়েছিলো। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দ্রæত পুনরায় অপারেশন করা হয়। সেখান থেকে বাসায় আনার পর আবার শরীর ফোলে যায়, গতকাল আবার রোগী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হলে তার হাসপাতালেই মৃত্যু ঘোষণা করেন চিকিৎসক। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদেরকে বিভিন্ন ভয় দেখিয়ে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট নিয়ে যেতে বাধ্য করেছে উক্ত অভিযুক্তরা। এই ভুল চিকিৎসার সাথে জড়িত সবার আটক করাসহ দ্রæত বিচারের দাবী করেন ভুক্তভোগীর স্বামী রেজাউল শিকদার, তিনি আরও বলেন যে, আর যেন কোনো রোগীর এমন ভুল চিকিৎসা না করতে পারে, আমার রোগীর ভুল চিকিৎসার কারণে প্রায় ৩ লাখ ৫৫ হাজার টাকা খরচ হওয়ার পর, আবার বুধবার আরও লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে, আমার এই ক্ষতিপুরণসহ এ ঘটনার সাথে জড়িতদের কঠিনতম শাস্তি দাবী করছি।
এ বিষয়ে নিহত রহিমা বেগমের ধর্ম ছেলে স¤্রাট বলেন, আমার মায়ের জরায়ু টিউমারের অপারেশন করার জন্য জামগড়া ছয়তলা দি-ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করি কিন্তু এক মহিলা ডাঃ মাকে অপারেশন করলে মায়ের মূত্রথলি কেটে ফেলে অনত্র লাগিয়ে দেয়া হয়েছে, এর কারণে ১৭ দিন প্র¯্রাব বন্ধ ছিলো। ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন হাসপাতালে মাকে নিয়ে চিকিৎসা করা হলেও বুধবার রাত ৯টা ১৫ মিনিটে মায়ের মৃত্যু হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে আমাদের। ক্ষতিপূরণ দেয়াসহ মায়ের মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী, তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ, প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
সে সময়ে দি-ল্যাবএইড হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোঃ মোশারফ হোসেন মন্টু’র কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে মোছাঃ ফৌজি সামের এক ডাক্তারের ভুলের কারণে এমনটি হয়েছে। তিনি দাবি করেন যে, এতে আমার কোনো হাত ছিলো না। পরে আরও বলেন, যেহেতু আমার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান তাই দায়ভার আমাকেই নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, রোগীর পক্ষের ৫০-৬০জন এসে এর আগে আমার হাসপাতালে হামলা করেছে, ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম, তারা মানেনি, এরপর ১ লক্ষ টাকা দিয়ে মিমাংসা করি। আমি এ বিষয়ে এলাকার মেম্বার চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। এখন রোগীর মৃত্যুর ঘটনার পর কোনো আলোচনা হয়নি।
সূত্রে জানা গেছে, দেশে ভুয়া ডাক্তারের সংখ্যা প্রায় লক্ষাধিক। তারা রাজধানীসহ সারাদেশে বিভাগ, জেলা, উপজেলা, থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে চিকিৎসা সেবার নামে প্রতারণা করছে। সেই সাথে অনুমোদনহীন ভেজাল ওষুধ রোগীদের কাছে বিক্রি করছে। সংশ্লিষ্টরা অবৈধভাবে অর্র্থ কামিয়ে বাড়ি গাড়ি করছে, রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন অনেকেই। স্থান ও প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে অনেকেই জমজমাট ভাবে ব্যবসা করছে। রোগীদেরকে চিকিৎসার জন্য ক্লিনিক, হাসপাতালে নিলেই অপ্রয়োজনীয় পরিক্ষা, টেস্ট দেওয়া হয়, ভুয়া ডাক্তার দিয়ে অপারেশন করানোর অভিযোগও রয়েছে। অন্যদিকে নামী দামি কোম্পানীগুলো ওষুধের গায়ে মূল্য লিখছেন না। ওষুধের গায়ে মূল্য না থাকায় কৌশলে দাম বেশি নিচ্ছেন অনেক ওষুধের দোকানদার। সেই সাথে নকল ও ভেজাল ওষুধ বিক্রি করে লাখ লাখ টাকার কারবার করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এক কথায় চিকিৎসা সেবার নামে অনিয়ম দুর্নীতির কারণে সরকারের বদনাম হচ্ছে। ভেজাল ওষুধে মানবদেহে রোগ ভালো না হয়ে আরও খারাপ পরিণতি হচ্ছে, রোগ বাড়ছে, অকালে মৃত্যু হচ্ছে।দেখা যায়, রাস্তা-ঘাটে ও মুদি দোকানেও ওষুধ বিক্রি করছে, ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেও অনেকেই ডাক্তার সেজে ওষুধের দোকান খুলে বসে চিকিৎসা করছে এবং ওষুধ বিক্রি করছে। যাদের ওষুধ সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই তারাও এখন কথিত ডাক্তার। শুধু সচেতনতার অভাবে মানুষের শরীর স্বাস্থ্য খারাপ হচ্ছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। ঢাকার ধামরাই ও সাভার-আশুলিয়ায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তিন থানায় প্রায় ১৫ হাজারের বেশি ওষুধের দোকান রয়েছে, এ যেন ব্যাঙের ছাতার মতো দোকান। তাদের অনেকেরই সঠিক কাগজপত্র নেই। অনেকের আবার বৈধ কাগজপত্র থাকলেও তার মেয়াদ নেই। সেই সাথে ক্লিনিক ব্যবসায় বিভিন্ন টেস্টের নামে অবৈধ ভাবে ভোক্তাকে ঠকানো হচ্ছে। ব্যাঙের ছাতার মতো ওষুধের দোকান ও ক্লিনিক, হাসপাতাল গড়ে উঠেছে।
র‌্যাব জানায়, ভুয়া চিকিৎসক নিজেকে ডাক্তার হিসেবে উল্লেখ করে আসে। রোগ বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি থাকার কথাও অনেক ব্যবস্থাপত্রে লিখেন এবং অনুমোদনহীন ভেজাল ওষুধ লিখে রোগীদের সাথে প্রতারণা করে। ক্লিনিক ও হাসপাতালের সামনে ওষুধ কোম্পানির গাড়ী-মটরসাইকেল দেখলে মনে হয় সেখানে মটরসাইকেলের বাজার লেগেছে। এ বিষয়ে র‌্যাব ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন জানায়, উক্ত ব্যাপারে অভিযান অব্যাহত আছে।
রাজধানী ঢাকার ওষুধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক সৈকত কুমার বলেন, ভারতীয় নিষিদ্ধ ওষুধ জব্দ করাসহ নিয়মিত অভিযান চলছে। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সায়েমুল হুদা গণমাধ্যমকে বলেন, এসকল বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পুলিশ ও র‌্যাব জানায়, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে দি-ল্যাব এইড হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোঃ মোশারফ হোসেন মন্টু বলেন, আমি অসুস্থ, ঢাকায় চিকিৎসার জন্য আসছি। তিনি আরো বলেন, আশুলিয়া সকল সাংবাদিকদের সাথে তার ভালো সম্পর্ক আছে এবং থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ হয়েছে, আমার আত্মীয় এসপি’র দিয়ে ফোন করানো হয়েছে, তারা বিষয়টি দেখবেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved , sokalerbangla.com
Theme Customized BY LatestNews