1. admin@sokalerbangla.com : সকালের বাংলা :
  2. info.jahid307ulipur@gmail.com : jahid Hossain : jahid Hossain
  3. naiknajmul@gmail.com : Najmul Hossain : Najmul Hossain
শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০:৩৯ অপরাহ্ন
শিরবাম:
অপরাধের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ, প্রশংসায় ভাসছেন ওসি নাজমুল আলম সাভারে গুলি করে রং মিস্ত্রিকে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি গ্রেফতার! আশুলিয়া রাজস্ব সার্কেলের সার্বিয়ার আবু বক্কর ছিদ্দিকের দুর্নীতি-অনেকেই হয়রানি! সদর উপজেলার দত্তপাড়া টু চাটখিল খালের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রশাসনিক উদ্যোগ নির্ধারিত পশুর হাটের উদ্দেশে যাওয়া গাড়ি মাঝপথে থামানো যাবে না বাগেরহাট ইনিষ্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজিতে তালা ঝুলিয়ে শাটডাউন ঘোষনা শিক্ষার্থীদের সুন্দরবনের মধুর মান ক্ষুন্ন করছে ভেজাল মধুতে নারী সেবাপ্রার্থীদের জন্য একটি মাতৃদুগ্ধ কর্ণার স্থাপন দত্তপাড়া ইউনিয়নে দুর্যোগ সহনশীল অবকাঠামো উন্নয়ন যশোরের সীমান্তে বিজিবি কঠোর অভিযানে দুই কোটি টাকার অবৈধ চোরাচালানী পণ্য আটক

কেহ মনে রাখেনি  অনেকটা নিরবে পেরিয়ে গেল মাসীর প্রয়াণ দিবস

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৩
শেখ খায়রুল ইসলাম পাইকগাছা খুলনা প্রতিনিধি:- কেহ মনে রাখেনি বীরাঙ্গনা গুরুদাসী মাসীর কথা।অনেকটা নিরবে পেরিয়ে গেল দিনটি। ২০০৮ সালের ৮ ডিসেম্বর রোগ-শোকে বিনা চিকিৎসায় কপিলমুনির ছোট্ট খুপড়িতে মৃত্যু বরণ করেন বীরঙ্গনা গুরুদাসী। বর্তমান সরকার বীরাঙ্গনা ও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া শুরু করেছে। তবে সে তালিকায় নেই গুরুদাসীর নাম।গত কয়েক বছর হল পালিত হয়না তার প্রয়াণ দিবস। মুক্তিযোদ্ধা স.ম বাবর আলীর দেওয়া তার বসত ঘরটি এখন পোকামাকড়ের আবাসস্থল।গুরুদাসী স্মৃতি রক্ষা নামে একটি সাইন বোর্ড টানানো থাকলেও বাড়ির আঙিনায় আশপাশের লোক-জন মলমূত্র ত্যাগ করে।১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকাররা তার চোখের সামনে স্বামী-সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা করে তার সর্বস্ব লুটে নেয়।এরপর মুক্তিযোদ্ধারা তাকে উদ্ধার করে কপিলমুনিতে আনেন।২০০৮ সালে গুরুদাসীর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে গুরুদাসী স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ গঠন হলেও পরে আর তাদের কোন বিশেষ কার্যক্রম চোখে পড়েনা।ঐদিন তার বসত বাড়িটিতে স্মৃতি জাদুঘর ও পাঠাগার তৈরির ঘোষণা দেয়া হলেও গত ১৫ বছরেও তার বাস্তবায়ন হয়নি। তার বসবাসকৃত পাকা ঘরটি  মৃত্যুর পর কথিত ভূমিদস্যুরা তা দখলে নেয়ার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এরই মধ্যে গত ২০১৬ সালের ১২ অক্টোবর সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক গেজেটে ৪১ জন বীরাঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়ে প্রথম গেজেট প্রকাশ হয়। ওই সময় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন,মুক্তিযুদ্ধে দেশের স্বার্থে বীরাঙ্গনারা অনেক বড় ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাদের অবদান কখনোই ভোলা যাবে না।এ জন্য সরকার বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী মৃত বীরাঙ্গনাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং তাদের স্মৃতি সংরক্ষণ করতে না পারলে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধে বীরঙ্গনাদের ভূমিকা অজানা রয়ে যাবে। খুলনার পাইকগাছা উপজেলার দেলুটিয়া ইউনিয়নের ফুলবাড়ী গ্রামের গুরুপদ মন্ডলের স্ত্রী গুরুদাসী। স্বামী গুরুপদ পেশায় এক জন দর্জি ছিলেন।২ ছেলে আর ২ মেয়ে নিয়ে ছিল তার সংসার। সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিলেও মুক্তিযোদ্ধাদের সাধ্যমতো সব রকম সাহায্য-সহযোগিতা করতেন তিনি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকারদের ইন্ধনে পাক বাহিনী তার বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় তাদের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে গুরুদাসীর উপর।এ সময় স্বামীসহ সন্তানরা তার সম্ভ্রম রক্ষায় এগিয়ে আসলে গুরুদাসীর সামনে একে একে গুলি করে হত্যা করে স্বামী সহ ২ ছেলে ও ১ মেয়েকে।সূত্রমতে,সেদিন বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তাদের মৃতদেহগুলি বীভৎস করে দেয়া হয়। এরপর গুরুদাসীর কোলে থাকা দুধের শিশুকে কোল থেকে কেড়ে নিয়ে হত্যা করা হয়। মায়ের সামনেই তাকে পুঁতে ফেলা হয় বাড়ির পাঁশে কাদা পানির ভেতরে। এরপর গুরুদাসীর ওপর হায়েনারা পর্যায়ক্রমে শুরু করে পাশবিক নির্যাতন। এরপর হায়েনারা চলে গেলে মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসী গুরুদাসীকে উদ্ধার করে।সর্বহারা গুরুদাসী তখন সম্পূর্ণরুপে মানসিক ভারসাম্যহীন।মুক্তিযোদ্ধারা গরুদাসীকে উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে রাখেন। দেশ স্বাধীনের পর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাবনা মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে তিনি পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি।দেশের বিভিন্ন জায়গায় উদভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়াতে থাকেন। আর বারবার ফিরে আসেন স্বামী- সন্তানের স্মৃতি বিজড়িত খুলনার পাইকগাছায়। মানসিক ভারসাম্যহীন গুরুদাসী তখন ভিক্ষা করে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকেন। সারাক্ষণ হাতে ছোট্ট লাঠি নিয়ে মানুষকে হাসতে হাসতে সাপের ভয় দেখিয়ে হাত পেতে ২/১ টাকা চেয়ে নিয়েই চলতে থাকে তার জীবন-জীবিকা দক্ষিণ- পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় সব বয়সের সব শ্রেণী-পেশার মানুষ তাকে এক নামেই চিনত গুরুদাসী মাসী হিসেবে।এরপর বাগেরহাট জেলা পরিষদের প্রশাসক মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামরুজ্জামান টুকু, পাইকগাছা উপজেলার চেয়ারম্যান স.ম বাবর আলী ও তৎকালীন পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিহির কান্তি মজুমদার কপিলমুনিতে সরকারি জায়গায় গুরুদাসীর বসবাসের জন্য একটি বাড়ি তৈরি করে দেন।সেখানেই অনাদরে, অযন্তে, অভাবে  বরাবরের ন্যায় অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে পড়ে থাকেন তিনি। ২০০৮ সালের ৮ ডিসেম্বর রাতের যেকোনো সময় নিজ ঘরে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরী দেখে প্রতিবেশীরা শয়ন কক্ষের জানালা দিয়ে তার মৃত দেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। গুরুদাসীর মৃত্যুর খবরে কপিলমুনিতে ছুটে যান মুক্তিযোদ্ধা,প্রশাসনসহ সর্বস্তরের মানুষ।তবে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে গুরুদাসীর আত্মত্যাগের কথা আজও ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পায়নি।
ইতিহাসের পাশাপাশি ভুলে গেছে গুরুদাসীর চিরচেনা আপনজন কপিলমুনিবাসী।তবে এ জনপদের মানুষের একটাই দাবী,ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই হোক গুরুদাসী মাসীর স্মৃতি।পূর্ব ঘোষণানুযায়ী সংরক্ষণ করা হোক তার বসত বাড়ীটি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved , sokalerbangla.com
Theme Customized BY LatestNews